কলাতলীর ইয়াবা ডন জামাল অধরা: বেপরোয়া তার বাহিনী

জসিম উদ্দিন :

কক্সবাজার শহরের কলাতলী জমজম হ্যাচারী এলাকার বাসিন্দা বহু বিতর্কিত ইয়াবা ডন জামাল উদ্দিন অধরা। গালে দাড়ি, মাথায় টুপি, মৌলভীর বেশ ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিলেও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে ইয়াবা জামাল। রহস্যজনক কারণে কেন পুলিশ তাকে আটক করতে পাচ্ছে না এনিয়ে এলাকার সচেতন মহলের কাছে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে ইয়াবা ব্যবসা করে আলিশান বাড়ি গাড়ি করে রাজার হালতে চলা ফেরা করছে এই ইয়াবা ডন জামাল। শুধু সে নয় তার সহদোর পাঁচ ভাইও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই জামাল মাত্র কয়েক বছর আগের রাস্তার ভ্রাম্যমাণ হকার ছিলেন। আর সেই হকার এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।এলাকাবাসীর অভিমত সব ইয়াবার কেরামতি।

গতকালের ফকির আজকের সুরম্য আট্টালিকার মালিক। দিনে দিনে বনে যাওয়া কোটি প্রতি ইয়াবা ডন জামাল এলাকায় কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। ইয়াবার কালো টাকা ব্যবহার করে গঠন করেছে এলাকায় একটি শক্তিশালী জামাল বাহিনীও।

জানা যায়, জামালের নেতৃত্বে তার আপন ও ভাগিনাকে নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট করে সারাদেশে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে ইয়াবা পাচার করে আসছে।

এদের মধ্যে আমির হোসেন গত মে মাসের ১৮ তারিখে ১৯ হাজার পিচ ইয়াবা নিয়ে রামু থানা পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। (মামলা নং জিআর ১৫০/১৯) যার বাজার মূল্য ৫৭ লাখ টাকা বলে মামলা সুত্রে জানা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জামালের ভাই দেলোয়ারের শশুর বাড়ি টেকনাফ হওয়ায় সেখান থেকে তার শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন নাস্তার মোড়কে করে টেকনাফ থেকে সরাসরি ইয়াবার চালান কলাতলীতে পাঠায়।আর কলাতলীর বাড়ি থেকে সারাদেশে ইয়াবার চালান পৌঁছে দেয় তার বাহিনীর সক্রিয় দুই সদস্য মৌলভী লেবাসধারী শামসু ও জামাল নামের তারা দুজন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জামালের বাড়িতে যে কোন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালে মিলবে ইয়াবা বড় চালান এবং বিক্রির কোটি টাকা।

গত কিছু দিন আগে শহরের লাইট হাউস এলাকা থেকে এক বার্মাইয়াসহ দুই যুবকের কাছ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা ছিনতাই করে করে জামাল।এসময় সে এবং তার সহযোগীরা নিজেদের ডিবি পরিচয় দেন এবং ভুয়া ডিবির কার্ড দেখান বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জামাল এবং তার সহযোগীদের কয়েকজন কোমরে মাঝে মাঝে ডিবির ভুয়া পরিচয় ঝুলাতে দেখা যায় বলে দাবি করেছেন তার এলাকার লোকজন। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে।

এ ছাড়াও ইয়াবার কালো টাকার গরমে এলাকায় সৃষ্টি করছে রামরাজত্ব। নামে-বেনামে জমি কেনার কথা বলে ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক পরিবারদেরকে পথে বসিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে এই জামাল বাহিনীর বিরুদ্ধে। থেমে নেই তাদের উপর অত্যচার। তাদের এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ সুপরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগিরা।

এ ব্যাপারে জামাল বলেন আমি আ.মীলীগের নেতাদের সঙ্গে জেল খেটেছি।এটি রাজনৈতিক মামলা। তিনি দাবি করেন ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় তার আপন ভাইকে তিনি ধরিয়ে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, কলাতলীর যে সমস্ত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে তাদের ব্যাপারে পুলিশ খবরা খবর রাখছে। সময় মতো আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।